দৈনিক প্রত্যয় ডেস্কঃ বাংলাদেশে গত ২৪ ঘণ্টায় করোনাভাইরাসে ৫ জন মারা গেছে এবং নতুন করে সংক্রমিত রোগী শনাক্ত হয়েছে ৫৫২ জন। আর যত দিন যাচ্ছে ততই করোনাভাইরাসে সংক্রমিত এবং মৃত্যুর সংখ্যা বাড়ছে। তবে পরিস্থিতি স্বাভাবিক করতে এবং সংক্রমণ রোধে বাংলাদেশে অঘোষিত লকডাউন চলছে। কিন্তু এরপরও রাজধানীর মানুষকে ঘরে রাখা যাচ্ছে না। তারা সামান্য অজুহাতে ঘরের বাইরে যাচ্ছে।
ভাইরাস মোকাবিলায় সরকারি-বেসরকারি অফিসে সাধারণ ছুটির মেয়াদ রয়েছে ৫ মে পর্যন্ত। তবে ছুটি ১৬ মে পর্যন্ত বাড়ানো হতে পারে বলে জানা গেছে।
করোনা কারণে প্রথম দফায় ২৬ মার্চ থেকে ৪ এপ্রিল পর্যন্ত ছুটি দেওয়া হয়েছিল। এরপর ছুটি বাড়িয়ে তা ১১ এপ্রিল করা হয়। ছুটি তৃতীয় দফা বাড়িয়ে করা হয় ১৪ এপ্রিল পর্যন্ত। এরপর চতুর্থ দফায় ২৫ এপ্রিল পর্যন্ত ছুটি বাড়ানো হয়। সর্বশেষ পরিস্থিতি বিবেচনায় নিয়ে ৫ মে পর্যন্ত বাড়ানো হয়েছিল।
এদিকে ভাইরাস সংক্রমণ থেকে নিজেদেরকে রক্ষায় সবাইকে ঘরে থাকতে সরকার আহ্বান জানালেও ঢাকা শহরের অলিগলিতে মানুষদেরকে চলাচল করতে দেখা যাচ্ছে।
রাজধানীসহ সারাদেশে সেনা টহল জোরদারের পাশাপাশি বিভিন্ন আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা কঠোর অবস্থান নিলেও ঢাকার অলি-গলির চিত্র পুরোপুরি ভিন্ন দেখা গেছে। সেখানে সামাজিক দূরত্ব বজায়ের কোনো নির্দেশনা মানা হচ্ছে না।
তবে রাজধানীর রাজপথে যানবাহন তেমন না থাকলেও অলি-গলিতে কিশোর এবং তরুণরা যত্রতত্র আড্ডা দিচ্ছেন।
সরেজমিনে রাজধানীর ফার্মগেট, তেজগাঁও, কারওয়ান বাজার, পান্থপথ, ধানমন্ডি, খিলগাঁও, উত্তর বাড্ডা, রামপুরাসহ বিভিন্ন এলাকার অলিগলি ঘুরে এসব চিত্র দেখা গেছে।
ফার্মগেটে দেখা যায়, অনেক উঠতি বয়সী কিশোর-তরুণ আড্ডা দিচ্ছেন। সকাল থেকেই দোকানগুলোতে কিশোর-তরুণদের আড্ডা ছিল চোখে পড়ার মতো। আর সেখানে সামাজিক দূরত্ব বজায়ের কোনো নির্দেশনাও মানা হচ্ছে না। তেজগাঁও এলাকায়ও ব্যাপক লোক সমাগম দেখা গেছে। সরকারি নির্দেশনা অনুযায়ী সকাল ৬টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত দোকান খোলা রাখার কথা বলা হলেও কয়েকটি দোকান সন্ধ্যা পর্যন্ত, এমনকি রাত ১০টা পর্যন্তও খোলা রাখতে দেখা যায়। আর এসব দোকানে সামাজিক দূরত্ব মানতে দেখা যায়নি।
অন্যদিকে সারাদেশে কার্যত লকডাউন চলছে। এই সময়ে সরকারি-বেসরকারি সব অফিস, আদালত, শপিংমল, কল-কারখানা বন্ধ রাখা হয়েছে। বন্ধ রয়েছে সব ধরনের যান চলাচল। আর করোনাভাইরাস সংক্রমণ রোধে রাজধানীতে ওষুধের দোকান ছাড়া সন্ধ্যায় সব দোকান, সুপারশপ এবং কাঁচাবাজার খোলার রাখার সময় বেঁধে দিয়েছে ঢাকা মহানগর পুলিশ।
এবিষয়ে ঢাকার পুলিশ কমিশনার মো. শফিকুল ইসলাম বলেন, প্রতিদিন সকাল ৬টা থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত দোকান, কাঁচাবাজার ও সুপারশপ খোলা রাখা যাবে বলে তারা প্রাথমিকভাবে সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন। পরে বিভিন্ন জনের অনুরোধে সময় এক ঘণ্টা বাড়িয়ে সন্ধ্যা ৭টা করা হয়েছে।
শফিকুল ইসলাম জানান, রাজধানীর বিভিন্ন পাড়া-মহল্লার দোকানগুলো সকাল ৬টা থেকে দুপুর ২টা পর্যন্ত খোলা রাখা যাবে। এরপরে অলিগলির কোনো দোকান খোলা যাবে না। আর সন্ধ্যার পর শুধু ওষুধের দোকান খোলা রাখা যাবে। যদিও পরে সেটা বিকেল ৪টা পর্যন্ত করা হয়েছে।
বাংলাদেশে করোনাভাইরাসে সংক্রমিত হয়ে মোট মারা গেছেন ১৭৫ জন। মোট শনাক্তের সংখ্যা ৮ হাজার ৭৯০। গত ২৪ ঘণ্টায় ৫ হাজার ৮২৭ জনের করোনা পরীক্ষা করা হয়।
প্রসঙ্গত, গত ৮ মার্চ দেশে প্রথম করোনায় আক্রান্ত ব্যক্তি শনাক্তের ঘোষণা আসে। আর ১৮ মার্চ করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে প্রথম মৃত্যুর ঘটনা ঘটে।
ডিপিআর/ জাহিরুল মিলন